এই বইটি লেখার কারণেই কারাগারে যেতে হয়েছিল লেখক-কে। এর একমাত্র কারণ ছিল অজানাকে জানার স্পৃহা। এটা কি, ওটা কি, এরূপ কেন হইল, ওরূপ কেন হইল না ? এই রকম ‘কি’ এবং ‘কেন’র অনুসন্ধান করিতে করিতেই মানুষ আজ গড়িয়া তুলিয়াছে বিজ্ঞানের অটল সৌধ। প্রশ্নকর্তা সকল সময়ই জানিতে চায় সত্য কি? তাই সত্যকে জানিতে পারিলে তাহার আর কোন প্রশ্নই থাকে না। একজন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাবিহীন মানুষ হয়েও লেখক তার অনুসন্ধিৎসু মনের যে পরিচয় সত্তর দশকে দিয়েছিলেন তা শুধু বিরল নয় বরং একটা বিষ্ময়!
আরজ আলী স্বশিক্ষিত ছিলেন বলেই বোধহয় তার আউট অব বক্স চিন্তা করার শক্তি ছিলো। তিনি সব ধর্মেরই বিভিন্ন অবিশ্বাস্য তথ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। উত্তর এখানে উহ্য, পাঠক নিজে উত্তর ভেবে নেবেন। অজানাকে জানতে মানুষ স্বভাবতই অনেক আগ্রহী। সেই আগ্রহ মেটাতে গিয়ে মানুষ কখনও দ্বিধায় পরে যায় আবার কখনও সন্তুষ্টি নিয়ে ফিরে আসে। এই দ্বিধা আর সন্তুষ্টি নির্ভর করে তার জানার পরিধির উপর। একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে জ্ঞানের মাপকাঠিতে একজন বিশ্বনন্দিত হতে পারে আবার ঐ একই ব্যাক্তি আরেকটি বিষয়ে জ্ঞানের মাপকাঠিতে প্রাথমিক স্তরের নিচে নেমে যেতে পারে।
যদি বলা হয় যে, সত্য হইবে একটি; তখন প্রশ্ন হইবে কোনটি এবং কেন? অর্থাৎ সত্যতা বিচারের মাপকাঠি (Criterion for truth) কি? সত্যতা প্রমাণের উপায় (Test for truth) কি? বইটি লেখার কারণে লেখককে করতে হয়েছিলো হাজতবাস। অসংখ্য প্রশ্ন তিনি বইটিতে রেখে গেছেন, কোনটা বাঞ্চনীয়, কোনটা না। কিন্তু চিন্তার খোরাক দিবে:- অপরিসীম। ব্রাভো।