যদ্যপি আমার গুরু

(0 reviews)

Page:
110
Edition:
2024
Price:
৳240
৳220
OFF 8%
Quantity:
99 available in stock
Total Price:
Share:
Home Delivery
Across The Country

Cash on Delivery
After Receive

Fast Delivery
Any Where

Happy Rerturn
Quality Ensured

Call Center
We Are Here

বইটি এখনও যারা পড়েননি তারা-বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাস, সমাজতন্ত্র, অর্থনীতি, ঐ সময়ের কিছু বিশিষ্ট মানুষের জীবনী, এসব নিয়ে অল্প কিছু জ্ঞান রেখে হলেও বইটি নিয়ে পড়তে বসবেন।
"যদ্যপি আমার গুরু" নিয়ে অল্প কথায় কিছু বলা খুব শক্ত কাজ। তবুও যেহেতু আবদুর রাজ্জাক স্যার বলেছেন, কিছু পড়ে তা নিজের ভাষায় বলতে না পারলে সে বই আসলে কিছুই পড়া হয়নি। তাই সাহস টা দেখাচ্ছি:- আবদুর রাজ্জাকের সাথে লেখকের পরিচয় পিএইচডি করতে গিয়ে। শেষ পর্যন্ত ডক্টরেট তো লেখকের করা হয়ে ওঠেনি, তবে দেখা পেয়েছেন এমন এক মানুষের যিনি লেখকের নিজের সত্ত্বাকে খুঁজে পেতে মশালের মতো পাশে ছিলেন। যাঁর মনন, যাঁর প্রজ্ঞাকে ধরে রাখতেই লিখেছেন এই বই।
আহমদ ছফার কলমে জীবন্ত হয়ে উঠেছে জাতীয় অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাকের জীবন, চিন্তার প্রসার, রাজনীতি-অর্থনীতি-সমাজনীতি, ধর্ম-বিজ্ঞান-শিল্প-সাহিত্য নিয়ে তাঁর মতামত। নিত্যদিনের টুকরো টুকরো ঘটনা, ক্রমশ বিস্তৃত আলোচনার প্রেক্ষাপট আর দৈনন্দিন কথোপকথনের ভীড় ঠেলে আহমদ ছফা কাগজে এঁকেছেন ভেতরকার মানুষটাকে। যে মানুষটা পড়তে ভালোবাসেন, যিনি সত্যকে সত্য বলতে কুন্ঠাবোধ করেন না, যিনি লেখকের হাতে একের পর এক তুলে দিয়েছেন বই, সৃষ্টি করেছেন জানার স্পৃহা, যিনি আপাদমস্তক একজন খাঁটি ঢাকাইয়া মানুষ হয়েও নতুনকে বরণ করেছেন মুক্তহাতে।
এ বইয়ের পাতায় পাতায় জেনেছি কিভাবে অজানাকে জানতে হয়, বুঝেছি জানা জ্ঞানকে কতভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করা যায়। প্রতিটি অক্ষর সৃষ্টি করেছে নতুন সত্যের আলোড়ন। এখানে দেশ ভাগ, নতুন দেশের জন্ম, সমাজের মারপ্যাঁচ আর রাজনীতির কুটিলতাকে ছাপিয়ে গিয়েছে জীবনকে দেখার সহজ স্বীকারোক্তি। জেনেছি বড় মানুষ হওয়ার চেয়ে জনপ্রিয় হওয়া কত সহজ। শিখেছি অতীতের মিথ্যে অহংকারকে মানুষ নিজের স্বার্থে বাঁচিয়ে রাখে কতটা নির্লজ্জভাবে। পেয়েছি নির্ভয়ে নিজের সত্য প্রকাশের সাহস।
বইটা শেষ করে মনে হল একটা ছোটখাট এন্সাইক্লোপিডিয়া পড়লাম। একজন মানুষের জানার পরিধি কত বিশাল হতে পারে তার নমুনা পেয়ে অভিভূত হলাম।গ্রীক সভ্যতায় সক্রেটিস এই কাজটা করেছিলেন।নিজে কিছুই না লিখে তাঁর বিস্তৃত জ্ঞানের পরিধি, মানুষকে আকর্ষণ করে তাঁদের উদ্বুদ্ধ করার ক্ষমতা দিয়ে তিনি জাগিয়ে দিয়ে গেছিলেন সেই সময়কার তরুণদের। বাংলাদেশ ও সমাজের জন্য অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাককে আমার সেরকম একজন বলেই মনে হয়েছে।
পড়তে পড়তে বারবার আমার আফসোস হয়েছে এতোদিন কেন আমি এই বই পড়ি নাই।তাহলে হয়তো বা নানা বিষয়ে তৈরী হওয়া ধ্যান-ধারণা খানিকটা অন্যদিকে প্রবাহিত হতে পারত। মূলত পারিবারিক ও পারিপার্শ্বিক সমাজের বদৌলতে গড়ে ওঠা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গী যে অনেক ক্ষেত্রেই ভুল দিকে প্রবাহিত হতে পারে সেটা আবারো চমৎকার ভাবে বুঝলাম।
চলে গিয়েছিলাম সেই সময়কার সমাজে,ইতিহাসের বর্তমানে।এই একটা মাত্র বই পড়ে বহু কিংবদন্তী সম্পর্কে অল্পবিস্তর যতটুকু জানতে পেরেছি এতোদিনে তার সিকিভাগও জানতাম না।তৎকালীন সমাজ, রাজনীতি, দর্শন, শিল্প-সাহিত্য, ধর্ম, হিন্দুমুসলমান জাতির মিথস্ক্রিয়া, এমনকি শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের কথাও অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাকের জবানিতে যেভাবে উঠে এসেছে তা মুগ্ধ হয়ে পড়েছি। গিলেছি বললেও ভুল হবে না। এতো উঁচু মাপের মনীষা আর সেই সাথে নিজস্ব সংস্কৃতি, কৃষ্টির ধারাবাহক হয়ে অতি সাধারণ জীবনযাপন করা মানুষটার ব্যক্তিত্ব আমাকে চুম্বকের মতো টেনেছে। তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর অবদান, সারা বিশ্বের জ্ঞানীগুণীদের কাছে তাঁর গুণের কদর সত্ত্বেও , ঢাকাইয়া ভাষায় অনর্গল কথা বলে যাওয়া, বেশভূষাকে অযথা গুরুত্ব না দেয়া, নিজেই আহমেদ ছফার হোস্টেলে খাবার পৌছে দেয়া, সক্কাল বেলায় তাঁর প্রেসে গিয়ে হাজির হওয়া এরকম আরো ঘটনাগুলো মানুষ হিসেবে তাঁকে আরো উঁচুতে স্থান করে দিয়েছে। প্রতিভাকে ঠিক ঠিক চিনে তিনি তাঁদের শক্তি যুগিয়েছিলেন বিকশিত হবার। এস এম সুলতানের গল্প যার মধ্যে গোগ্রাসে গিলেছি।
পড়তে পড়তেই মনে হয়েছে আমরা অর্থাৎ এই অববাহিকায় জন্ম নেয়া মানুষেরা কত ভাগ্যবান ছিলাম।ইউরোপের সৃষ্টি হওয়া সভ্যতার বহু আগেই সভ্য হয়ে ওঠা একটা জাতি ধীরে ধীরে কিভাবে পিছিয়ে পড়ল তা নিয়ে বারবার আফসোস হয়েছে।বই থেকেই অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাকের জবানিতে একটা লাইন উদ্ধৃত করি, “যে জাতি যত বেশি সিভিলাইজড তার রান্নাবান্নাও তত বেশি সফিস্টিকেটেড।আমাগো ইস্টার্ন সভ্যতার রান্নার সাথে পশ্চিমাদের রান্নার কোন তুলনাই অয়না। অরা সভ্য হইছে কয়দিন।এই সেদিনও তারা মাছমাংস কাঁচা খাইত।“
অকৃতদার সেই মানুষটা যিনি কিনা লাস্কী মারা যাওয়ায় তাঁর থিসিস মুল্যায়ন করার কেউ নেই বলে ডিগ্রি ছাড়াই বিদেশ থেকে দেশে ফিরে এসেছেন, তাঁর সম্পর্কে আমার শ্রদ্ধা ও উচ্ছ্বাস প্রকাশের শেষ হবে বলে মনে হয় না। তাঁর রাজনৈতিক মতাদর্শ আমার কাছেও আমার কাছে সম্পুর্ণ অন্যরকম ঠেকেছে। ব্যক্তিগতভাবে মুসলীম লীগের সমর্থক ও জিন্নাহর অনুসারী এই লোকই আবার ছিলেন পরবর্তী সময়ের বাংলাদেশ তৈরীর অন্যতম স্বপ্নদ্রষ্টা, সেক্যুলার চিন্তাধারার বাহক। ধর্মের উর্ব্ধে তিনি সমাজের জন্যই কাজ করেছেন বলে আমার মনে হয়েছ। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের কথার সাথে শেখ মুজিবর রহমান, তাজউদ্দীন আহমদ সম্পর্কেও জানতে পারলাম তাঁর ভাবনা থেকে।
একটা বই তখনই একজন পাঠকের কাছে বেশী ভালো লাগে যখন কোনভাবে সেই বইটা তার জীবনে প্রভাব ফেলে। সেই দিক দিয়ে বইটা শতভাগ সফল। তাই পড়া শেষ করেই অনুভূতিগুলো লিখতে বসে গেলাম। বোধহয় মানুষটার কথা মনে করেই যে, বইটা আসলে আমি কতটুকু ভেতরে নিতে পারলাম। কোনোরকম স্বীকৃতির আশা না করে নিজের সমাজ ও মানুষদের এভাবে ঋণী করে যাওয়া মানুষটার জানার পরিধি যেরকম অবাক করেছে, তেমনি মুগ্ধ করেছে তাঁর সাধারণ জীবনযাপন। বইটা আমাকে যতটা না জানিয়েছে তার থেকে বেশি ভাবিয়েছে।
There have been no reviews for this product yet.
Home Delivery
Across The Country

Cash on Delivery
After Receive

Fast Delivery
Any Where

Happy Rerturn
Quality Ensured

Call Center
We Are Here