সকলেই কবি নয়, কেউ কেউ কবি।’-এভাবেই সৃষ্টিশীল ব্যক্তিসত্তার কবিপ্রতিভাকে বুঝে নিতে চেয়েছেন জীবনানন্দ দাশ। সেই সঙ্গে অনেক রকম কবিতার কথা বলেছেন তিনি। স্বপ্নের পাখিরা বইয়ে সংকলিত সাবিহা সুলতানার অনুভব পুঞ্জ ‘অনেক রকম কবিতার কোন পর্যায়ে পড়বে, তা নিয়ে কথাবার্তা চলতে পারে। তার লেখালেখি সম্পর্কে এটুকু বলা যায় যে, প্রাণের কথা তিনি গানের মতো করে অবিরল বলে যেতে পারেন। জোর করা ভাব আর ধার করা ভাষার প্রতি সম্মোহন নেই তার।
সাবিহা সুলতানা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাকে যে-প্রক্রিয়ায় শব্দের শরীরে গেঁথে দিয়েছেন, তাতে শিল্পের চেয়ে সত্যের প্রতি পক্ষপাতই অধিকতর পরিস্ফুট। কবিতার আত্মার শুদ্ধতার জন্য অবয়বের সুস্থতাও যে জরুরি, তাঁর কবিতায় তা অনেক ক্ষেত্রেই প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। তিনি নির্বিঘ্নে নিজের আবেগ ও বিশ্বাসের আনুগত্য করেছেন। ফলে তার লেখায় কবিতার চেয়ে কবির মুখই উজ্জ্বল অবয়বে ধরা দিয়েছে। সাবিহার স্বপ্নের পাখিরা তাঁর মনের আকাশকেই নিরাপদ মনে করে, যদিও এই পাখিদের সঙ্গে অনেকেরই আত্মীয়তা তৈরি হতে পারে। এই সম্পর্কসূত্র থেকেই হয়তো রচিত হবে আরো অনেক নতুন কবিতা। তিনি বদলে যাবেন এবং বদলে নেবেন তার লেখার গতি ও গন্তব্য। সাবিহা এবং তাঁর স্বপ্নের পাখিদের জন্য শুভকামনা।
ড. তারেক রেজা
বাংলা বিভাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়