মিরপুর সনি সিনেমা হলের সামনে জনৈক ক্যানভাসার বলছে, এই বইটি পড়লে আরও জানতে পারবেন: — ইথিক্স কাকে বলে, কত প্রকার ও কী কী, প্রতি পদের একটি করে উদাহরণ — একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের জীবনে ইথিক্সের অভাবে প্রকাশ্য ও গোপন কোন কোন সমস্যায় ভুগতে হয় — একটি ঘর একটি ইথিক্স প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে কতটা কমতে পারে মাথাপিছু ব্যয়। নিকেতনের এসিরুমে বসে জনৈক কপিরাইটার লিখল একটিমাত্র বাক্য— ‘পৃষ্ঠা নং ৭৯; পড়ুন এবং খুঁজে নিন নিজের পছন্দের মানুষকে।’ জনৈক জাদুকর টিভি স্ক্রিনে বলল— ‘দেখলে তো বন্ধুরা, কীভাবে হাওয়া থেকে নিয়ে এলাম বই।’ এর মধ্যেই দেশজুড়ে বণ্টন করা হলো এক রঙচঙে লিফলেট, তাতে উপচে পড়ছে প্রলোভন— বইটি পড়ে যা বুঝলেন, লিখে মেসেজ করুন; জিতে নিন নগদ ৫০ লক্ষ টাকা। সম্মিলিত প্রচারণা জোটের কারসাজিতে বইটি বিক্রি হলো ২-৫ কপি, কিন্তু তন্ন তন্ন তালাশেও মিলল না একজন পাঠকের সন্ধান । শেলফবন্দি হয়েই কেটে গেল সুদীর্ঘ জীবন, খসে পড়ল বাইন্ডিং, পৃষ্ঠা হারাল যৌবন। প্রজন্ম বদল হলো ৩টি; বইটি আজও জানে না কোন অপরাধে বা অযোগ্যতায় সে হলো পাঠকবঞ্চিত। লেখকের অবদমিত লালসার দায়ভার যদি বইকেই করতে হয় বহন, প্রচলিত ইথিক্স কি এই সংকটকে উপলব্ধিতে সক্ষম? বইয়ের জায়গায় মানুষকে বসিয়ে পুনরায় পড়ুন প্রশ্নটা। মেটাফরে মোড়ানো ফানুস, মহিষেও বাঁচে মানুষ!