নারী প্রশ্নে আধুনিককালেও খুব প্রাচীন একটি লড়াই চলছে। ক্ষমতা, সমাজ ও ইতিহাসের সুনির্দিষ্ট অবস্থা থেকে নারীকে বিচ্ছিন্ন অনুমান করেই সাধারণত ‘নারী’ নিয়ে ভাবাভাবি হয়। ফলে নারী সমাজ বা ইতিহাসের কোনো সত্তা না হয়ে স্রেফ শরীর হয়ে ওঠে। তখন নারীবাদ পুরুষতান্ত্রিক ক্ষমতা বা সম্পর্কের পর্যালোচনা বা বিরোধিতা নয়, হয়ে ওঠে বায়োলজিক্যাল পুরুষের বিরুদ্ধে বায়োলজিক্যাল নারীর বিদ্রোহ। ক্ষেত্রবিশেষে সেই বিদ্রোহ ব্যক্তি পুরুষের পর্যায়ে ন্যায্য হলেও, পুরুষতন্ত্র ও ক্ষমতার প্রশ্ন আমাদের পর্যালোচনার বাইরে থেকে যায়। পুরুষতন্ত্রের গোড়া উপড়ে ফেলা যাদের চিন্তা ও কাজের গোড়ায় থাকে, সাধারণত তারা ‘নারীবাদী’ নামে পরিচিত। কিন্তু নারীবাদ শুধু নারীর মুক্তির কথা বলে না, পুরুষতান্ত্রিক নিগড় থেকে সবার মুক্তির কথা বলে। অতএব, এটাও পরিষ্কার থাকা চাই যে পুরুষতন্ত্রের মোকাবিলা স্রেফ নারীর জিজ্ঞাসা নয়, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে পুরো সমাজেরই জিজ্ঞাসা। নারী প্রশ্নে একটি সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলা ও পাশ্চাত্য নারীবাদী চিন্তা এবং চাপিয়ে দেওয়া উন্নয়ন নীতির বিপরীতে ভিন্নভাবে ভাবার তাগিদ থেকেই লেখা এই বই—পুরুষতন্ত্র ও নারী।