হোস্টেল জীবন, অনেকটা শাষন-বারণ বিহীন জীবন। তার উপর যদি থাকে পারিবারিক টানাপোড়েন, তাহলে তো কথাই নেই। ভুল পথে পা বাড়ানোর জন্য একটি মেয়ের জীবনে এ দুটো কারনই যথেষ্ট। তেমনই একটি মেয়ে মৃদুলা। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের একটা বড় সময় কাটিয়েছে সে আজিমপুরের ছাপড়া মসজিদ কলোনি আর নীলক্ষেতের মহিলা হোস্টেলে। মফস্বল থেকে আসা এই মেয়েটির পরিবারবিহীন জীবনে সাবলেট বা হোস্টেলের বান্ধবীরাই সবচেয়ে কাছের মানুষ।
হঠাৎ মৃদুলার উপরে ভর করে প্রেম। ক্লাসমেট-রুমমেটদের উপুর্যুপুরি ঠাট্টা আর রসিকতায় সেই প্রেম আরও গভীরে চলে যায়। অল্পদিনের মধ্যেই মৃদুলা টের পায়, তার প্রেমিক ভীষণ কপট একজন পুরুষ। দুদিন পরপরই সে প্রেমিকা বদল করে। কিন্তু, আশ্চর্য্যজনকভাবে এই কপট পুরুষটি মৃদুলার মনের একটা বিশাল জায়গা দখল করে নেয়। বারবার মৃদুলাকে ছেড়ে সে অন্য প্রেমিকাদের কাছে চলে গেলেও, ঠিকই মৃদুলা তাকে আবার আপন করে নেয়। অবশ্য, কপট এই পুরুষটিকে প্রশ্রয় দেয়ার চরম শিক্ষাও পায় মৃদুলা।
এই উপন্যাসটিতে উঠে এসেছে একাধিক পুরুষ চরিত্র। কখনও সে পুরুষটি মৃদুলার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসমেট, কখনও সে পুরুষটি মৃদুলার প্রেমিক, আবার কখনও সে পুরুষটি মৃদুলার কোনো রুমমটের ভাই অথবা প্রেমিক, কখনও বা সে পুরুষটি মৃদুলার প্রেমিকের বন্ধু।এই পুরুষ চরিত্রগুলোর ব্যবচ্ছেদ করাই উপন্যাসটির মূল উপজীব্য হলেও,গল্পের ফাঁকে ফাঁকে উঠে এসেছে মেয়েদের সাবলেট বা হোস্টেল জীবনের নানান ঘটনা,এসেছে হিন্দু-মুসলমানের প্রেম নিয়ে নানা জটিলতাও।
তবে সবকিছুকে ছাপিয়ে, গল্পে গল্পে নারীর চোখে পুরুষকে দেখার একাধিক প্রয়াস চালিয়েছেন উপন্যাসটির রচয়িতা।