গোটা পৃথিবীর মানুষ এই ডায়েরিটা পড়ে কেঁদেছে। এটা পড়ে আমি একপ্রকার হতভম্ব। ১৩ বছরের একটা মেয়ে এতটা ইন্টেলেকচুয়াল হতে পারে জানা ছিল না! আত্মগোপনে থাকাকালীন প্রতিটা অভিজ্ঞতা, আধারের ঘেরা এক গুমট জীবন, কৈশোরের রঙিন স্বপ্ন, বয়ঃসন্ধির অভিজ্ঞতা, প্রেম এই সবকিছুই যেন চোখের সামনে ভেসে উঠছিল। বইটি পড়ার মাধ্যেমে যেন আমি নিজেই ইতিহাসের সাক্ষি হয়ে রইলাম। যা নিরেট সত্য এবং কঠিন বাস্তব। ১৩ বছর বয়সী একজন কিশোরী, যার চেনা পৃথিবীটা হঠাৎ করেই বদলে যেতে শুরু করে। অ্যানা ফ্রাঙ্ক, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিভিষীকাময় অধ্যায়ের অনেক বড় একজন সাক্ষী। যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অনিশ্চিত দিনগুলোর কথা ডায়েরীতে লিখেছিল নিয়মিতভাবে। সে সময়ের ভয়াবহ দিনগুলো এই কিশোরীর কলমের আঁচড়ে ডায়েরীর পাতায় ফুটে উঠেছে। ডায়েরিটা পড়ে কেঁদে কেটে আকুল হয়েছে গোটা পৃথিবীর মানুষ।দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ শুরুর পর যখন জার্মান নাৎসীবাহিনী ইহুদী হননে মেতেছিল, তখন আনা ফ্রাংকের পরিবার আমস্টারডামের একটি মৃত্যুকুপে ২৫ মাস লুকিয়ে থেকেও নাৎসীদের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারেনি। এই বন্দি জীবনের বর্ণনাই ছিল আনা’র ডায়েরিতে।এই বই একটা ডায়েরি বটে কিন্তু পড়া শুরু করলে ধীরে ধীরে মনে হবে একটা জীবন্ত উপন্যাস। সমাজ, বিজ্ঞান, থ্রিলার এর সব উপকরণ আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরবে। যুদ্ধের বর্ণনা। পারিবারিক মানসিক অবস্থা। দর্শন সব মিলিয়ে একটা আলাদা জগত তৈরি করেছে। একটা মুক্ত আকাশ বানানো যাবে ডায়রি পড়ার সময়। একেক দিন যাবে আর মনে জাগবে প্রশ্ন এর পর কি হবে। কিশোর বয়সের প্রেম এবং আত্মজিজ্ঞাসা পাঠককে ভাবাবে।