এক্সপেরিমেন্টের বিষয়বস্তু ছিল- সোশাল মিডিয়ায় নিয়মিত লিখলে কী হয় এবং পাঠক আসলে পড়েন কিনা, তাদের মান কেমন!
আমাদের সব মহলে একটা ধারণা তৈরি হয়েছে যে সোশাল মিডিয়ার পাঠকরা আসলে সিরিয়াস পাঠক নন। তারা শুধু লাইক দিয়েই খালাস। নিজের লেখার এক্সপেরিমেন্ট থেকে বুঝলাম, ব্যাপারটা মোটেও সত্য নয়। একটু ভিন্ন ফর্মে প্রায় ৪০টা গল্প টানা লিখলাম, প্রায় প্রত্যেকদিন। বিস্ময়করভাবে আমার ফেইসবুকের বন্ধু সংখ্যা গল্পগুলো আপ করার সময়ে জ্যামিতিক হারে বাড়তে শুরু করলো ।
এ বইয়ে ছাপা হওয়া দুয়েকটি ছাড়া প্রায় সবকটি গল্পই রাত জেগে চিৎ হয়ে শুয়ে মোবাইলে টাইপ করে ফেইসবুকে আপ করেছি। কখনো কখনো লং জার্নিতে বাসে বসেও লিখেছি। গল্পগুলো অনলাইনে দেয়ার কিছুক্ষণ পর থেকেই কমেন্ট পেতে থাকি। কমেন্টগুলো দেখলেই বুঝতে পারি, পাঠকরা পড়ছেন এবং বুঝছেন। এমনকি ভুল থাকলে ওয়ালে বা ইনবক্স করে ধরিয়ে দিচ্ছেন। গল্প লেখাকালীন দুইমাসে আমার সাথে প্রায় ২ হাজার ব্যক্তি ফেইসবুকে সংযুক্ত হোন বন্ধু হিসেবে।
কেবল গল্প বলে এতো বন্ধু জোগাড় হয়! অনলাইন পাঠক নিয়ে তাই আমার দৃষ্টিভঙ্গি বদলেছে। তাদের উৎসাহেই চিন্তা করি সংকলন বের করবো। কেননা, অনেকেই বলেছেন, কাজের ফাঁকে অনেকসময় ফেইসবুকে ঢোকা হয় না, বা ব্যস্ততার জন্য ধারাবাহিকভাবে গল্প পড়তে পারেন না।
অনলাইন মিডিয়ার কারণে লেখার ধরন বদলেছে। গল্প বলার ধরন পরিবর্তন হয়েছে। তবু তো গল্পগুলো গল্পই রয়ে গেছে। চেষ্টা করেছি- অনলাইন মিডিয়ার ভাষা ও পাঠকের মন ধরতে। ফিল্ম ও টিভি নাটকের স্ক্রিপ্ট এবং বিজ্ঞাপনের কপি লেখার অভিজ্ঞতা গল্পগুলো লেখার সময় নতুন মাত্রা দিয়েছে।
কিছু কাছের মানুষ কট্টর সমালোচক হিসেবে ছিলেন। তাদের কারণেও গল্পগুলো একটা মানে দাঁড়িয়েছে বলেই বিশ্বাস।