উপন্যাসের পুরো লেখাতেই বাবরের অনবরত নারীসঙ্গ বদল এবং তার শারীরিক চাহিদা চরিতার্থ করার বিভিন্ন উপায়, কলাকৌশল, যৌনতা কখনো বা রগরগে বয়ানে, কখনো শিল্পীর তুলির মত, আবার কখনো বা কবিতার মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
নারীসঙ্গের ক্ষেত্রে তার পছন্দ সতের থেকে বিশ বছরের উঠতি বয়সী মেয়েদের, যাদের সে তুখর কথার যাদুর মাধ্যমে পটিয়ে বিছানায় নিয়ে যেতে পারে। সে শারীরিক চাহিদা পূরণে বিয়ে করে বন্ধনে যেতে ইচ্ছুক নয়, জোরাজুড়ি করে ধর্ষণেও সে বিশ্বাসী নয়। তাই বলে সে গণিকালয়েও যায়না। সে সময় দিয়ে, প্লট সাজিয়ে, কথা বলে মেয়েদের শারীরিক সম্পর্কে যেতে সম্মত করে। তার জীবনের একমাত্র দর্শন- খেলারাম খেলে যাঃ। সে মানুষকে বিশ্বাস করাতে চায়-
"তোমার কাছে যেটা অস্বাভাবিক, আরেকজনের কাছে সেটাই সবচেয়ে স্বাভাবিক। তুমি যা বিশ্বাস করো, আরেকজন তা করেনা। তুমি যাতে বাঁচো আরেকজনের কাছে সেটাই মৃত্যু। আমি যেভাবে বাঁচতে চাই, আরেকজন সেভাবে চায়না। তুমি যা চাও, আরেকজন তা ফেলে দেয়। সবই সত্য। কারণ সত্য মাত্রই আপেক্ষিক"।
যৌনতা আর শরীরী সম্পর্কের বিস্তৃত বিবরণের জন্য প্রকাশের পরপরই উপন্যাসটি নিয়ে ওঠে সমালোচনার ঝড়। অশ্লীলতার অভিযোগে লেখককে শুনতে হয়, প্রচুর নিন্দামন্দ। তবে সময়ের সাথে সাথে সাহিত্যের সব ধরনের পাঠকই উপন্যাসটিকে সাদরে গ্রহণ করেন এবং গ্রহণযোগ্য বলে দাবি করেন। উপন্যাসটি পাঠকের মনে একটি প্রশ্ন তৈরি করে দিবে :-,
“একজন মানুষকে কি এত সহজে বিচার করা সম্ভব”?
সমাজ, সভ্যতা এসব অদৃশ্য সুতো মানুষের মনে অনেক অনেক সীমারেখা তৈরি করে দেয়। তাই কোন মানুষকে আমরা আমাদের তৈরি করা সীমারেখার বাইরে দেখতে পারি না। যারাই এসব সীমারেখার বাইরে চলে যায় তারা আমাদের কাছে হয় দেবতা নয় অসুর। খুব সহজে আমরা মানুষের শ্রেণীবিভাগ এবং সরলীকরণ করে ফেলতে পছন্দ করি। হয়তো বেচে থাকার দায়ে কিংবা শৃঙ্খলা রক্ষার দায়ে। আমাদের এই সরলীকরণ করে নিতে হয় না হয় তাতে সম্মতি দিতে হয়! কিন্তু জীবনতো এত ছোট না!..............