ধর্ম যার যার, ব্যবসা সবার! বিশ্বব্যাপী এই ভয়াবহতার শিকার মানবজাতি, যার আর নাম মহাজনগণ। বেনিয়ার অবাধ বানিজ্য বিপ্লব, সাম্রাজ্যের সম্ক্রসারণ এবং দেশে দেশে অনাহুত সামরিক হস্তক্ষেপ এই ভয়াবহতার নেপথ্য কারন। এই উপলদ্ধি চিত্তে দৃঢ় করতে না পারলে বঞ্চিত লাঞ্ছিত মহাজনগণের সাথে হূদয়বৃত্তির যোগ হবে না, শোষিতের দীর্ঘশ্বাস মরমে পশিবে না।
সাম্ক্রতিক দশক গুলোয় পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদ তার সম্ক্রসারণের উসিলা পরিবর্তন করেছে। সমাজতন্ত্র থেকে ইসলামে এই পরিবৃত্তি তথা ক্রুসেডের উত্থান একবিংশ শতকে জিহাদ ও খেলাফত প্রপঞ্চদ্বয়ের ঐতিহাসিক পূনর্জাগরণ ঘটিয়েছে। সাম্রাজ্যবাদের প্রতিপ্রশ্নেই এই পূনর্জাগরণ, ইহা অনস্বিকার্য।
সাম্রাজ্যবাদের রোপিত এই বিক্ষোভে এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের বহু রাষ্ট্র তার ভারসাম্য হারিয়েছে। অন্তর্গত জনগণ অন্তর্দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়েছে। অধুনা গোদের উপর বিষফোড়ার মতো জন্ম নিয়েছে খেলাফত রাষ্ট্র। এই বিক্ষোভ সাম্রাজ্যবাদের আপন ঘরে সিদ কাটতেও সময় নেয় নাই। আর উলুখাগড়ার মতো নির্বিচারে বলি হয়েছে মহাজনগণ।
জিহাদ ও খেলাফত এমন দুটি প্রপঞ্চ যার উত্তেজনা আমাদের সমাজেও ক্রমবর্ধমান। বিশ্বব্যাপী এই উত্তেজনার অংশীদার মহাজনগণ। যে মানুষ এই উত্তেজনার বলি সেও মহাজনগণের অংশ। তাই এই প্রপঞ্চদ্বয়ের ইতিহাস যে বিভিন্ন সাপেক্ষ প্রকল্পের আওতাধীন তা অনুধাবন করা এখন সময়ের দাবি।
ইতিহাস বরাবরি কোন না কোন প্রকল্পের অধীন। তাই একটি নিরাবেগ নিরাসক্ত জায়গা থেকে ইতিহাসকে দেখতে হলে নিষ্ঠার প্রয়োজন। ঐতিহাসিক বিকাশ ও বিবর্তনের পর্বসমূহে ক্রিয়াশীল প্রকল্পগুলোর সামাজিক রাজনৈতিক বাতাবরণকে শনাক্ত করতে পারা ইতিহাস পাঠের সদা সচেতন শর্ত। সাথে সাথে ইতিহাসের সঙ্গে বর্তমানের সামাজিক পরিক্রমার সম্কর্ক অনুধাবনও জরুরি।
সারাৎসারে ‘জিহাদ ও খেলাফতের সিলসিলা’ এই অনুধাবনেই সচেষ্ট হয়েছে। রাষ্ট্রিয় সংহতি অটুট রাখার স্বার্থেই ক্রমবর্ধমান ধর্মীয় উত্তেজনার মাঝে এ প্রচেষ্টার সঞ্চালন সমাজের সর্বস্তরেই প্রয়োজন। কারন কথা ছিল ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র আমাদের সবার হবে।