জাতির বেঈমান যখন জয়োনবাদীদের সঙ্গে গোপন সমঝোতা ও আপসকামীতায় ব্যস্ত, ঠিক তখনই ঈমানী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দুরন্ত সাহসে গর্জে ওঠে আমৃত্যু লড়াকু হামাস যোদ্ধারা। মজলুম জননেতা শেখ আহমাদ ইয়াসিনের হাত ধরে জন্ম নেওয়া হামাস এখন রক্তাক্ত জনপদ ফিলিস্তিনের মুক্তির লড়াইয়ে আশা-ভরসার একমাত্র প্রতীকে পরিণত হয়েছে। আজকের এই অবস্থানে পৌঁছতে অসংখ্য শাহাদাত এবং ত্যাগের নজরানা পেশ করতে হয়েছে। ইজরাইলের মতো ঘৃণ্য অপশক্তির মোকাবিলায় হামাস যে দু:সাহসিতার পরিচয় দিচ্ছে, তা অবিশ্বাস্য,
অভাবনীয়। সকল রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে একমাত্র আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের ওপর তায়াক্কুল করে জায়োনবাদীদের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে বিপ্লবী হামাস।
হামাসের উত্থান এবং পথ চলাটা খুব সুখকর ছিল না। তাকে একইসঙ্গে অনেকগুলো পক্ষের মোকাবিলা করতে হয়েছে। একদিকে জায়োনবাদী ও তার সমর্থকগোষ্টির পরিকল্পিত পিচাশসূলভ ষড়যন্ত্র অন্যদিকে নিজ দেশের ফাতাহ, মাতৃসংগঠন ইখওয়াসুল মুসলেমিন এমনকী নিজেদের ঘরের সংকটকেও সামাল দিতে হয়েছে।
বিশ্বব্যাপীই হামাস সম্পর্কে জানতে ব্যাপক কৌতুহল। প্রথম ইন্তিফাদার গর্ভে জন্ম নেওয়া হামাস কীভাবে জায়োনবাদীদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে জনগণের সমর্থন নিয়ে সরকার পরিচালনা করছে, তা জানার আগ্রহ অনেক জ্ঞানপিপাসু লোকের। কীভাবে লড়াই আর সমাজসেবা একাকার করে নিয়েছে হামাস, তা জানতে ব্যাকুল অনেকেই। হামাসের বাহ্যিক চেহারার সঙ্গে আমরা পরিচিত হলেও অভ্যান্তরীণ বিষয়গুলো অনেকেরই অজানা। এমন একটা মুক্তিকামী আন্দোলনের পর্দার অন্য পাশটাও জানা দরকার।
ভারতীয় উপমহাদেশের বাংলাভাষী পাঠকবৃন্দও হামাস নিয়ে অনুসিন্ধুৎসু। বাস্তবে বাংলা ভাষায় এই বৈপ্লবিক মুক্তি আন্দোলন নিয়ে সেই অর্থে কোনো কাজ হয়নি, নেই কোনো একাডেমিক বয়ান। বর্তমান বিশ্বের অন্যতম আলোচিত এই মুক্তি আন্দোলনকে বাংলাভাষীদের কাছে তুলে ধরার প্রয়াস নিয়েছেন তরুণ লেখক ও অনুবাদক আলী আহমদ মাবরুর। অনেক পরিশ্রম করে তুলে এনেছেন হামাস সম্পর্কিত অনেক আজানা তথ্য ও ঘটনা। দৃশ্যমান-অদৃশ্যমান অনেক ঘটনা পড়ে পাঠকবৃন্দ কখনো অশ্রুসিক্ত হবেন, কখনো রিক্ত হবেন, কখনো-বা শিহরণ জাগবে রক্তকণিকায়।