অতি সম্প্রতি বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গনে উন্নয়ন অনুকূল বেশ কিছু সংস্কৃতি সংযোজিত হয়েছে যার মধ্যে নানা বিষয়ের উপর অলিম্পিয়াড, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের জন্য প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা। আবার গত ১২-১৩ বছর ধরে প্রাক-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের জন্যও প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা। অবাক করা বিষয় হলো আমাদের স্কুল কলেজের ছাত্ররা প্রোগ্রামিংকে চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিয়েছে এবং ইতিমধ্যে বেশ সফলতাও অর্জন করেছে। যেমন সকল অলিম্পিয়াডের মধ্যে প্রথম সিলভার মেডেল পেয়েছে সিটি কলেজের মো. আবীরুল ইসলাম ২০০৯ সালে। তাও আবার উপমহাদেশের সকল প্রতিযোগীর মধ্যে শ্রেষ্ঠ হয়ে। ২০১২ সালে ইতালিতে অনুষ্ঠিত আইওয়াই’তে তো বাংলাদেশের বৃষ্টি সিকদার সারা পৃথিবীর সবগুলো মেয়ের মধ্যে শ্রেষ্ঠ বিবেচিত হলো। এই বিষয়গুলোতে আমাদের তরুণদের যে প্রশংসনীয় আগ্রহ ও চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার ক্ষমতা তাঁর যথাযথ প্রতিফলন ঘটেছে এই বইয়ের লেখকের মাধ্যমে।
ঝংকার মাহবুবের বইয়ের পাণ্ডুলিপি পড়ে আমি খুবই অবাক এবং আশান্বিত হয়েছি যে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম নানা বিষয়ে যথেষ্ট দক্ষতা অর্জন করেই বড় হচ্ছে। বইয়ের নামকরণ থেকে শুরু করে ব্যবহূত ভাষা এবং ঢং সবই ভিন্ন ও আকর্ষণীয়। বইয়ের নাম ‘হাবলুদের জন্য প্রোগ্রামিং’ হলেও লেখক সন্দেহাতীতভাবে বিশ্বাস করে যে আমাদের যে কোনো তরুণের জন্য প্রোগ্রামিং শেখা তেমন কোনো কঠিন কাজ নয়। প্রতিটা অধ্যায়ই লেখকের স্বতন্ত্র ভাষায়, ঢংয়ে খুবই হালকা মেজাজে উপভোগ্য কৌতুকের সঙ্গে উপস্থাপিত হয়েছে যাতে করে কোন ‘হাবলু’ই টের না পায় যে সে খুবই জটিল কিছু শিখতে যাচ্ছে। অনুশীলন করার জন্য বইতেই পর্যাপ্ত ফাঁকা জায়গা দেয়া আছে।
আমি আশা করি আমাদের ছেলেমেয়েরা এই বইটি পড়ে যেমন প্রোগ্রামিংয়ের ভয় জয় করবে ঠিক একইভাবে প্রোগ্রামিংয়ের বেশ কিছু ধারণাও আত্মস্থ করতে পারবে। আমি ঝংকার মাহবুবকে বইটি লেখার জন্য অভিনন্দন জানাই আর তাঁর বইয়ের পাঠকদের প্রতি রইল মেধার অনুশীলনীর মাধ্যমে শ্রেয়তর মস্তিষ্কের অধিকারী হয়ে বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ করার আমন্ত্রণ।
ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ
অধ্যাপক, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ,
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়।