প্রায় দেড়শ বছর আগে হবিগঞ্জ জেলার জলসুখা গ্রামের এক বৈষ্ণব আখড়ায় ঘেগান নামে নতুন সঙ্গীত ধারা সৃষ্টি হয়েছিল। মেয়েদের পােশাক পরা কিছু রূপবান কিশাের নাচগান করত। এদের নামই ঘেটু। গান হতাে প্রচলিত সুরে, যেখানে উচ্চাঙ্গসঙ্গীতের প্রভাব ছিল স্পষ্ট। অতি জনপ্রিয় এই সঙ্গীত ধারায় নারীবেশী কিশােরদের উপস্থিতির কারণেই এর মধ্যে অশ্লীলতা ঢুকে পড়ে। বিত্তবানরা এইসব কিশােরকে যৌনসঙ্গী হিসেবে পাবার জন্যে লালায়িত হতে শুরু করেন। একসময় সামাজিকভাবে বিষয়টা স্বীকৃতি পেয়ে যায়। হাওর অঞ্চলের শৌখিনদার মানুষ জলবন্দি সময়টায় কিছুদিনের জন্যে হলেও ঘেটুপুত্র নিজের কাছে রাখবেন-এই বিষয়টা স্বাভাবিকভাবে বিবেচিত হতে থাকে। শৌখিনদার মানুষের স্ত্রীরা ঘেটুপুত্রকে দেখতেন সতীন হিসেবে। আনন্দের কথা ঘেটুগান আজ স্মৃতি। সঙ্গীতের নামে কদাচার বন্ধ হয়েছে। একই সঙ্গে হারিয়ে গেছে বিস্ময়কর এক সঙ্গীত ধারা।