বাঙ্গালী খুব-ই অকৃতজ্ঞ জাতি। এরা কাউকেই তার প্রাপ্য সম্মান, মর্যাদা এবং ভালোবাসা দিতে পারে না, অথবা জানেই না। তেমনি পারে নি কর্ণেল তাহেরের বেলায়ও। কবি গুরু বাঙালিকে যে আরও আগেই উপলব্ধি করতে পেরেছিল তা বুঝতে পারি তখন, যখন তার সেই বিখ্যাত লাইনটির কথা ভাবি।
“সাত কোটি বাঙালিরে হে মুগ্ধ জননী রেখেছ বাঙালি করে মানুষ করনি।”
তাহের ছিলেন অকুতোভয় কর্ণেল, একজন সত্যিকারের নেতা। মানুষটার ছোট থেকেই ছিল দেশের প্রতি অগাধ ভালোবাসা। সেজন্য পাকিস্তান থেকে পালিয়ে চলে আসেন যুদ্ধে অংশ নিতে। সে
যুদ্ধে নিজের পা হারান। কিন্তু নেতৃত্বে ছিলেন অবিচল। তার একের পর এক বুদ্ধিদৃপ্ত কর্মকান্ডে শুধু দেশের মানুষই নন, বিষ্মিত হয় স্বয়ং পাক-সেনারাও।
তবে এই সাহসী বীরের জীবনের উপসংহার সুখকর হয় নি। হবেই বা কি করে? বাঙালি বলে কথা! যাকে সে বন্দী অবস্থা থেকে মুক্ত করেছিল সেই মানুষ টাই কিনা তাকে বিনা অপরাধে ঝুলিয়ে দিয়েছিল।
বইটি পড়তে গিয়ে কঠিণ হৃদয়ের কোনো মানুষের চোখ দিয়েও অশ্রু গড়িয়ে পড়বে। কিছু মৃত্যু আছে যা মানুষকে মহান করে। ভালবাসতে শেখায় আদর্শকে। বাংলাদেশের ইতিহাসে কর্নেল তাহেরের মৃত্যুটিও এমনি একটি মৃত্যু। উপমহাদেশের সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর ঘটনার মধ্যে এটিও একটি।