বাংলা সাহিত্যের কালজয়ী লেখক আশীফ এন্তাজ রবির জন্ম ঢাকায়। ১৯৭৭ সালের ২১ আগস্টে। তখন মসজিদে ফজরের আযান হচ্ছিলো, সেই পবিত্র প্রত্যুষে বাংলা গল্পের এই বরপুত্র ভূমিষ্ট হোন।
শৈশবেই তিনি রিমেটিক ফিভার নামক বিরল রোগে আক্রান্ত হোন। এই কালাত্মক ব্যাধির কারণে তার গা সবসময় ম্যাজ ম্যাজ করে, হাতে পায়ে অসহনীয় ব্যথা। প্রখ্যাত শিশুরোগ বিশেজ্ঞ ড. এম আর খান তার চিকিৎসা করেন। এই চিকিৎসার গুণেই যৌবণে পর্দাপন করার আগেই এই সুমহান শিল্পী রোগমুক্ত হোন। তার শরীরের ব্যথা চলে গেলেও কিছু ব্যথা তার হাতের আঙুলে রয়ে যায়।
মূলত এই ব্যথার কারণেই বাংলা সাহিত্যের এই দিকপাল লেখালেখি কম করেন। তবে তিনি মুখে গল্প বলতে পটু, কেননা তার গলায় কোনো সমস্যা নেই। জনৈক জ্যোতিষী বলেছেন, কোনো মায়াবতী তার হাত ধরলে, তিনি এই ব্যধিমুক্ত হবেন। তার হাতের যন্ত্রণা লাগব হবে।
আশীফ এন্তাজ রবি তাই সকাতরে প্রায়ই বলেন, আমার জন্য না— বাংলা সাহিত্যের মুখের দিকে তাকিয়ে কোনো হূদয়বতী কি এগিয়ে আসবে না?
পৃথিবী তুমুল নিষ্ঠুর। কাজেই অদ্যাবধি কেউ এগিয়ে আসেনি। অগত্যা— দীর্ঘ চার বছর পর— হাতের যন্ত্রণা উপেক্ষা করে তিনি লিখেছেন নতুন উপন্যাস: চন্দ্রমুখী। নিঃসন্দেহে এই উপন্যাসটির মাধ্যমে বাংলা সাহিত্য একটি নতুন যুগে পদার্পন করল। দেশ ও জাতির জন্য এটা অনেক বড় একটি ঘটনা।
কিছু কিছু বড় ঘটনা মানুষের চোখ এড়িয়ে যায়। চন্দ্রমুখী লেখার ঘটনাটিও কারো চোখে পড়বে না বলেই লেখকের বিশ্বাস।
লেখক পরিচিতির এই নির্লজ্জ অংশটুকু আশীফ এন্তাজ রবি নিজেই লিখেছেন। বড় ঘটনার মতো এই তুচ্ছ ব্যাপারটিও মানুষের চোখ এড়িয়ে যাবে, এটাই তার প্রত্যাশা।