রনির জন্য আরাে একজন নতুন মাস্টার ঠিক করা হয়েছে। এই মাস্টার সাহেব প্রতি শুক্রবার আসবেন। সময় এখনাে ঠিক করা হয় নি। সকালে আসতে পারেন। বিকেলেও আসতে পারেন। রনি লক্ষ করেছে বড় বড় দুঃসংবাদগুলি সে পায় নাস্তার টেবিলে। যেবার তাদের নেপালে বেড়াতে যাওয়া ঠিক হলাে, রনি ব্যাগ গুছিয়ে পুরােপুরি তৈরি। স্কুলের বন্ধুদের কাছ থেকে বিদায় নিয়েছে। তাদের বাসার ঠিকানা নিয়েছে, নেপাল থেকে ভিউকার্ড পাঠাবে। তার ক্যামেরার জন্যে দু’টা ফিল্ম কিনেছে। সেবারও নাশতার টেবিলে মা বললেন, নেপাল যাওয়া হচ্ছে না। এবারের শীত খুব বেশি পড়েছে। রনি তখন মাত্র পাউরুটি মুখে দিয়েছে। তার এতই মন খারাপ হলাে যে, পাউরুটি গলায় আটকে খকখক করে কাশতে শুরু করল। মা রনির দিকে তাকিয়ে কঠিন গলায় বললেন, ঠিক মতাে খাও রনি। একটি আস্ত পাউরুটি মুখে দিয়ে ফেললে তাে গলায় বাঁধবেই। বাবাও মুখের ওপর থেকে পত্রিকা নামিয়ে সরু চোখে তাকিয়ে রইলেন। যেন পাউরুটি গলায় বিঁধে যাওয়া বিরাট অপরাধ। অথচ অপরাধ তারাই করেছেন। বেড়াতে যাওয়া ঠিকঠাক করে হঠাৎ বাতিল করে দিয়েছেন। | রনির ইচ্ছা করছে বাবা-মা দু’জনের ওপরই রাগ করতে। রাগ করতে পারছে না, কারণ এই দুজনের কেউ তার বাবা-মা না। দু’জনই নকল বাবামা। রনির ক্লাসের একটি মেয়ের সত্যা আছে (নাম মিঠু, অতিরিক্ত মােটা বলে তাকে ডাকা হয় মােটা-মিঠু, সংক্ষেপে মাে মি)। দু’জন ছেলের আছে।