আমাদের ক্লাসে মুনির ছেলেটা একটু অদ্ভুত ধরনের। কারাে সঙ্গে কথা বলে না। সব সময় পেছনের বেঞ্চিতে বসে। ক্লাসের সারাটা সময় জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকে। স্যার কিছু জিজ্ঞেস করলে চোখ পিটপিট করতে থাকে। তখন তার মুখ দেখে মনে হয়, সে স্যারের একটি কথাও বুঝতে পারছে না।
মুনিরের এই স্বভাব স্কুলের সব স্যাররা জানেন। কাজেই কেউ তাকে কিছু জিজ্ঞেস করেন না। শুধু আমাদের অঙ্ক স্যার মাঝে-মাঝে ক্ষেপে গিয়ে বলেন, 'কথা বলে না। ঢং ধরেছে। চার নম্বুরী বেত দিয়ে আচ্ছা করে পেটালে ফড়ফড় করে কথা বলবে। আমাদের স্কুলের কমন রুমে নম্বর দেয়া নানান রকমের বেত আছে। বেত যত চিকন তার নম্বর তত বেশি। চার নম্বুরী বেত খুব চিকন বেত। এক নম্বুরী বেত সবচেয়ে মােটা।<br>
কথায় কথায় বেতের কথা তুললেও অঙ্ক স্যার কখনাে বেত হাতে নেন না। কিন্তু এক-এক দিন মুনিরের উপর অসম্ভব রাগ করেন। যেমন আজ করেছেন। রাগে তাঁর শরীর কাঁপছে। মুখ দিয়ে ফেনা বের হচ্ছে।<br>
স্যার চৌবাচ্চার একটা অঙ্ক করতে দিয়েছেন। জটিল অঙ্ক। একটা পাইপ দিয়ে পানি আসছে। একটা ফুটো দিয়ে চলে যাচ্ছে। কিছুক্ষণ পর ফুটো বন্ধ করে দেয়া হল--এই সব হাবিজাবি। মুনির ফট করে অঙ্কটা করে ফেলল। আমি মুনিরের পাশে বসেছি, কাজেই ওর খাতা দেখে আমিও করে ফেললাম। অঙ্ক হয়ে গেলে হাত উঁচু করে বসে থাকতে