নিশ্চয়ই আপনাদের “হাতীর” গল্পটি মনে আছে? এই বইটিকে বিশ্লেষণ করতে গেলে হাতীর সেই গল্পটি পুনঃরায় বলতেই হবে:-“একজন ভদ্রলোক একবার একটা হাতির ক্যাম্পে প্রবেশ করেছেন। তিনি হাঁটতে হাঁটতে দেখলেন অনেকগুলি হাতি আছে সেখানে কিন্তু একটা হাতিও কোনো খাঁচার ভিতরে নাই এবং কোনো হাতিই লোহার শিকল দিয়ে বাঁধা না। বরং হাতিগুলিকে তাদের পায়ে ছোট্ট একটা দড়ি দিয়ে খুঁটির সাথে বেঁধে রাখা হয়েছে।এটা দেখে ভদ্রলোক খুব বিস্মিত হলেন। তিনি আশ্চর্য হয়ে ভাবলেন এই বিশাল বিশাল হাতিগুলির জন্য এই দড়ি ছিঁড়ে পালানো তো কোনো ঘটনাই না, তবু ঠিক কী কারণে এরা সেই চেষ্টাটাও করছে না!প্রচণ্ড কৌতূহলী হয়ে সেই লোক ক্যাম্পের একজন ট্রেইনারকে খুঁজে বের করলেন। তাকে জিজ্ঞেস করলেন ঠিক কী কারণে হাতিগুলি কখনোই দড়ি ছিঁড়ে পালানোর চেষ্টা করে না?ট্রেইনার তখন উত্তর দিলেন, এই হাতিগুলি যখন খুব ছোট ছিল তখন আমরা এই একই সাইজের দড়ি দিয়ে তাদেরকে বেঁধে রাখতাম। তখন এই দড়িই হাতিগুলিকে বেঁধে রাখার জন্য যথেষ্ট ছিল। তারা বিশ্বাস করতে করতে বড় হয়েছে যে তারা এটা ছিঁড়ে বের হতে পারবে না। তাই, তারা এখনো বিশ্বাস করে এই দড়ি তাদেরকে এখনো আটকে রাখতে পারে, এই কারণে তারা এটা ছিঁড়ে বের হওয়ারও চেষ্টা করে না।ভদ্রলোক তখন বুঝতে পারলেন, হাতিগুলির নিজেদেরকে মুক্ত না করার একটাই কারণ। সেটা হলো সময়ের সাথে সাথে তারা এটা বিশ্বাস করতে করতেই বড় হয়েছে যে এই দড়ি ছিঁড়ে মুক্ত হওয়া সম্ভব না। এবং এখনো এটাই তাদের বদ্ধমূল বিশ্বাস।মানুষ তার চিন্তায় বড় হতে না পারলে মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটবে না। আর মনুষ্যত্বহীন মানুষ-তো পশুর সমান। যারা চিন্তাশীল তারা ইতিমধ্যেই বুঝে গিয়েছেন, “বাঙালীর চিন্তাচেতনার বিবর্তনধারা” নামক এই মাস্টারপিস টা বিশ্লেষণ করার পূর্বে কেন আমি হাতীর গল্পটি বললাম। প্রতিটি মানুষের জীবদ্দশায় বইটি অন্তত একবার হলেও পড়া উচিৎ। এই মাস্টারপিসগুলো সংগ্রহে রেখে দিতে হবে। আলাদা করে বইটিকে আর বিশ্লেষণ করার প্রয়োজন মনে করছি না। বইটি আপনার সংগ্রহে রাখুন, অন্যকেও পড়তে দিন। জ্ঞানের কোনো লিমিটেশন নেই। জ্ঞান হচ্ছে আলো আপনি প্রয়োজনের সময় যতটা সম্ভব এই আলো ছড়িয়ে দিতে পারবেন আপনি ততটাই সমৃদ্ধ আর সুন্দর হয়ে উঠবেন। আলো ছড়াতে কৃপণতা করলে সবার আগে বোধহয় তা সূর্য করতো। অথচ দেখুন সে কতটা উদার, তাই সে সুন্দর। এই পৃথিবীর প্রতিটি চিন্তাশীল জ্ঞানী মানুষগুলোও এক একটি সূর্য। আমরা আপনার আলো অনুভবের অপেক্ষায়। ছড়িয়ে দিন আর জ্বলে উঠুন নিজ মহিমায়।