সে এক ঘুটঘুটে অন্ধকার রাত। কালো জলরাশির তলে ফুঁসে ফুঁসে উঠছে আটলান্টিক মহাসাগর। ক্যাপ্টেনের নাম থমাস, বোটের যাত্রী কেবল আমি। দু’ঘন্টা চলার পর থমাস ইঞ্জিন বন্ধ করে দিল। শব্দ দিয়ে সে কারো মনোযোগ আকর্ষণ করতে চায় না। এখনও তীর বেশ দূরে; আবছা আলোয় সেটাকে কালো একটা সরলরেখার মত দেখাচ্ছে। বৈঠা চালিয়ে আরও খানিকটা এগুনোর পর বলল, ‘নেমে পড়।‘ ‘কোথায়?’ আতঙ্কিত স্বরে প্রশ্ন করলাম। ‘আমি তো সাঁতার জানি না!‘ ‘সেটা তোর সমস্যা,’ অন্ধকারে দাঁত ঝলমলানো কুৎসিত একটা হাসি দিয়ে আমাকে এক ধাক্কায় বোট থেকে পানিতে ছুড়ে দিল। ওয়াটার-প্রুফ ব্যাগটি আঁকড়ে ধরে আমি হাবুডুবু খেতে থাকলাম। অনেক হাত পা ছোড়াছুড়ি করেও কোন লাভ হল না। সাগরের অতলে তলিয়ে যেতে লাগলাম। হঠাত শক্ত মাটিতে পা ঠেকে গেল। সোজা হয়ে দাঁড়াতে বুঝলাম পানি সেখানে হাঁটুর সমান, ভাটার টানে একদম কমে এসেছে। কি লজ্জা, আরেকটু হলে এতেই ডুবে মারা যেতাম। স্বস্তিতে বুক ভরে ঠাণ্ডা বাতাস টেনে নিয়ে আমি আমেরিকার পানে হাঁটা দিলাম।